স্বদেশ ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমি এখন ইচ্ছার বিরুদ্ধে রাজনীতি করি। এই কথাটা বলা আমার জন্য কষ্টকর ব্যাপার। আমি ক্ষমতালিপ্সু লোক না। আমি ক্ষমতার জন্য মিথ্যা কথা বলি না। যেটা পারবো সেটাই বলবো। আমি আমার জীবনে অনেক পেয়ে ফেলেছি। আমি মন্ত্রী হওয়ার জন্য রাজনীতি করি না।
আজ শনিবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি হাইস্কুলের মেধাবী শিক্ষার্থীদের সম্মাননা ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যা প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মারামারি হবে না এমন কোনো কথা নেই, হবেই। আমাদের সময়েও হয়েছে। এখনো হচ্ছে, ভবিষ্যতেও হবে। এটা অস্বাভাবিক কিছু না, স্বাভাবিক। কিন্তু কীভাবে মারা হলো সেটাও ভাবার বিষয়। ভাবার বিষয়, কষ্টের বিষয় হলো, যে ছেলেটাকে মেরে ফেললো সে তো আর জীবনে ফিরে আসবে না। ওর বাবা-মার স্বপ্ন শেষ। বুয়েটে তারাই চান্স পায় যারা বেস্ট অব দ্য বেস্ট। আমার কষ্টের বিষয় অন্য জায়গায়। আরো ২০টা ছেলে যারা এই মামলার সম্পৃক্ত কিংবা আরো সম্পৃক্ত হবে। আদালতে প্রমাণ হলে তাদের যাবজ্জীবন কিংবা ফাঁসি হবে। তাহলে আমরা কী বানাচ্ছি, মানুষ নাকি রেজাল্ট? এটা আমার প্রশ্ন সবার কাছে, নিজের কাছেও।
তিনি আরো বলেন, মনটা ভালো না। বুয়েটের ঘটনা মেনে নিতে পারছি না। যখন এই বিশটা ছেলের ফাঁসি হবে সেটা মেনে নিতে পারছি না। ওদের বাপ-মার কী হবে ভাবছেন? এরা সব বেস্ট অব দ্য বেস্ট। আমার কাছে কষ্ট লাগে। সব জায়গায় নেগেটিভ নিউজ। কোনো পজেটিভ নিউজ কোনো পত্রিকায় ছাপায় না।
আওয়ামী লীগের এই সংসদ বলেন, আমি নির্বাচন আর করবো না। আমি ভুয়া রাজনীতি করতে আসি নাই। রাজনীতি আমার ধান্দা না। আমরা তিন পুরুষ ধরে রাজনীতি করে আসতেছি। আমি ভালো কিনা আমি নিজেই তো জানি না। আমরা একে অপরকে খারাপ বলে টিকে থাকতে চাই। আমি কিছু কাজ করতে চাচ্ছি। এর জন্য আমি মাঠে নামবো। আমার কাজ হলো ভালো মানুষ খোঁজা।
শামীম ওসমান বলেন, কিছু সংখ্যক মানুষ এদেশে অশান্তি সৃষ্টি করে। আমাদের দলেও আছে, অন্য জায়গায়ও আছে, কোনো দল করে না এমনও আছে, পুলিশের ভেতরে আছে, সাংবাদিকদের মধ্যেও আছে। সেজন্য শেখ হাসিনা শুদ্ধি অভিযান শুরু করলেন। কিন্তু শুরুতেই বিভিন্ন দিক থেকে খেলা শুরু হয়ে গেলো।
জালকুড়ি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম, জালকুড়ি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ এনায়েত হোসেন, দাতা সদস্য জাকির হোসেন, জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম বাচ্চু প্রমুখ।